‘মাশরাফি ধান কাটতে যাননি, এনেছেন ধান কাটার মেশিন’

এক মাশরাফিভক্তের এমন স্ট্যাটাস ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়। তবে স্ট্যাটাস হলেও এটাই সত্য যে ধান কাটার মেশিনই এনেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।

সবখানেই এখন জনপ্রতিনিধিদের ধান কাটার ছবি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা। হুট করে গাড়ি থেকে নেমেই কৃষকদের সঙ্গে ধান কাটার খবরও ভাইরাল হয়েছে।

তবে এতে কৃষকরা কতটুকু উপকার পাচ্ছেন তা অনুমেয়ই। অন্য এমপিদের পথে হাঁটেননি নড়াইল-২ আসনের সাংসদ মাশরাফি। নড়াইলের কৃষকদের তিনি ধান কাটার মেশিনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। মাশরাফির একটি ঘনিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে বিষয়টি।

ওই মেশিন সবাই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ব্যবহারে কৃষি অফিস নির্ধারিত একটা ফি রয়েছে। মাশরাফির ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এলাকার গরীব কৃষক যারা আছেন, তাদের হার্ভেস্ট মেশিন ব্যবহারের যাবতীয় খরচ বহন করবেন মাশরাফি নিজেই।

করোনার এই সংকটকালে বোরো ধান মাড়াই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন মাশরাফির এলাকার কৃষকরা। তাদের কথা ভেবেই গত ২১শে এপ্রিল কৃষি মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার পাঠান মাশরাফি। তার পাঠানো ডিও লেটারের ভিত্তিতে নড়াইল জেলার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে দুটি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার ও ৩টি রিপার মেশিন বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে একটি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার এসেছে কৃষকদের হাতে। অন্য মেশিনটি দ্রুত কৃষকদের হাতে তুলে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

২৮ এপ্রিল দুপুরে সদর উপজেলা কৃষি অফিসের সামনে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত একটি অত্যাধুনিক ধানকাটার হার্ভেস্টার মেশিন কৃষকদের হাতে তুলে দেন।

৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে হার্ভেস্টার ক্রয় করেন সদরের হবখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও কৃষক রিয়াজুল ইসলাম চঞ্চল। একটি রিপার ক্রয় করেন নড়াইল পৌরসভার বিজয়পুর এলাকার কৃষক মো. আকছির শেখ। সাধারণত একটি হার্ভেস্টার মেশিন কিনতে খরচ হয় ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে যিনি সেটা কিনবেন, নির্দিষ্ট পরিমাণ একটা টাকা জমা দিয়ে বাকিটা দীর্ঘমেয়াদী কিস্তিতে দেয়ার সুযোগ থাকছে তার।

জেলার চাহিদার ভিত্তিতে পরে আরও ৩টি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার আনার প্রক্রিয়া চলছে। হার্ভেস্টার মেশিন প্রতিঘণ্টায় এক একর জমির ধান কাটা, মাড়াই, পরিষ্কার ও বস্তাবন্দি করতে সক্ষম। রিপার মেশিনে ঘণ্টায় ৫০ শতাংশ জমির ধান কাটা সম্ভব। সর্বোপরি প্রয়োজনের সময় নড়াইলের মাঠেই আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর কৃষির সুফল পাবেন কৃষকরা।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের এই সাবেক অধিনায়ক। ইতিমধ্যেই নড়াইলের ডাক্তার ও নার্সদের পিপিই দিয়েছেন। গঠন করেছেন একটি ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম। যারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

সদর হাসপাতালে একটি জীবাণুনাশক কক্ষ স্থাপন করেছেন মাশরাফি। ডাক্তারদের জন্য বানিয়েছেন সেফটি চেম্বারও। আর নিজ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এলাকার দুস্থদের বিভিন্ন সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম এই অধিনায়ক।

আপনি আরও পড়তে পারেন